সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

যে দোয়ায় আল্লাহ সন্তুষ্ট হন
হজরত নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি সকালে তিনবার এবং বিকালে তিনবার দোয়াটি পাঠ করবে আল্লাহতায়ালা অবশ্যই কিয়ামতের দিন তাকে সন্তুষ্ট করবেন -মুসনাদে আহমাদ
رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ نَبِيًّا
উচ্চারণ : রাজিতু বিল্লাহি রাব্বান, ওয়াবিল ইসলামি দীনান, ওয়া বিমুহাম্মাদিন নাবিয়্যান
অর্থ : আমি আল্লাহতায়ালাকে প্রভু পেয়ে সন্তুষ্ট, ইসলামকে জীবনাদর্শ পেয়ে সন্তুষ্ট হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে নবী হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট আছি
যে দোয়া পাঠে আল্লাহ বান্দার জিম্মাদার হয়ে যান
হজরত বুরাইদা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর দশটি বাক্য পাঠ করবে আল্লাহতায়ালা তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান তার মধ্যে পাঁচটি বাক্য দুনিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত আর পাঁচটি বাক্য আখেরাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত নবী করিম (সা.)- কর্তৃক বর্ণিত সেই দোয়াটি হলো-
حسبي الله لديني حسبي الله لدنياي حسبي الله لما أهمني حسبي الله لمن بغي علي حسبي الله لمن حسدني حسبي الله لمن كادني بسوء حسبي الله عند الموت حسبي الله عند المساءلة في القبر حسبي الله عند الميزان حسبي الله عند الصراط حسبي الله لا إله إلا هو عليه توكلت و إليه أنيب
উচ্চারণ : হাসবিয়াল্লাহু লি দ্বীনী হাসবিয়াল্লাহু লি দুনিয়ায়ি হাসবিয়াল্লাহু লিমা আহাম্মানী হাসবিয়াল্লাহু লিমান বাগা আলাইয়্যা হাসবিয়াল্লাহু লিমান হাসাদানী হাসবিয়াল্লাহু লিমান কাদানী বিসু-য়িন হাসবিয়াল্লাহু ইনদাল মাউতি হাসবিয়াল্লাহু ইনদাল মাসআলাতি ফিল কাবরি হাসবিয়াল্লাহু ইনদাল মিজান হাসবিয়াল্লাহু ইনদাস সিরাতি হাসাবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা-হুয়া আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া ইলাইহি উনিব
অর্থ : আল্লাহতায়ালা আমার দ্বীন দুনিয়ার জন্য যথেষ্ট যা কিছু আমাকে পেরেশান করবে সে ব্যাপারে আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট যে ব্যক্তি আমার বিরোধিতা করবে তার ব্যপারে আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট যে আমার সঙ্গে হিংসা করবে তার ব্যপারে আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট যে আমার বিরুদ্ধে কুচক্র করে তার ব্যপারে আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট মৃত্যুর সময়ই আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট কবরের প্রশ্ন-উত্তরের সময় আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট মিজানে আমল পরিমাপের সময় আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট পুলসিরাত পার হওয়ার সময় আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট তিনি ব্যতীত আর কোনো উপাস্য নেই আমি তার ওপর ভরসা রাখি আমি তার প্রতি মনোনিবেশ করি
প্রিয় নবী (সা.)-এর প্রিয় একটি দোয়া
হজরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর কাছে নিবেদন করলেন, আমাকে এমন একটি ওজিফা (দোয়া বা আমল) শিখিয়ে দিন যা আমি সকালে সন্ধ্যায় পাঠ করব নবী করিম (সা.) তাকে শিখালেন এবং বলে দিলেন, তুমি বাক্য সকালে পাঠ করবে, সন্ধ্যায় পাঠ করবে এবং শোয়ার সময় পাঠ করবে -আবু দাউদ : ৫০৬৯ তিরমিজি : ৩৩৯২
اللَّهُمَّ فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ رَبَّ كُلِّ شَىْءٍ وَمَلِيكَهُ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِى وَشَرِّ الشَّيْطَانِ وَشِرْكِهِ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ফাতিরাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি আলিমিল গাইবি ওয়াশ শাহাদাতি রাব্বি কুল্লি শাইয়িন ওয়া মালিকাহু আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লা আনতা আউজু বিকা মিন শাররি নাফসি ওয়া শাররিশ শাইতানি শিরকিহি
অর্থ : আকাশ জমিনের স্রষ্টা, উপস্থিত অনুপস্থিতের জ্ঞানী, সবকিছুর প্রতিপালক মালিক! আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি আপনি ব্যতীত আর কোনো উপাস্য নেই আমি নিজের নফসের অনিষ্ঠ থেকে, শয়তানের অনিষ্ট থেকে এবং শিরক থেকে আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি
প্রয়োজন পূরণের দোয়া
হজরত আয়েশা (রা.) একদা দোয়া করছিলেন তখন নবী করিম (সা.) তাকে বললেন, তুমি পরিপূর্ণরূপে দোয়া কর তোমার প্রয়োজনীয় সব কিছু যেন তাতে অর্ন্তভুক্ত থাকে তিনি দোয়া শেষ করে নবী (সা.)-এর দিকে ফিরে প্রয়োজনীয় সবকিছু অন্তর্ভুক্তসহ পরিপূর্ণ দোয়াটি শেখার আগ্রহ প্রকাশ করলেন তখন নবী করিম (সা.) বললেন, তুমি বল- 
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنْ الْخَيْرِ كُلِّهِ عَاجِلِهِ وَآجِلِهِ مَا عَلِمْتُ مِنْهُ وَمَا لَمْ أَعْلَمْ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ الشَّرِّ كُلِّهِ عَاجِلِهِ وَآجِلِهِ مَا عَلِمْتُ مِنْهُ وَمَا لَمْ أَعْلَمْ وَأَسْأَلُكَ الْجَنَّةَ وَمَا قَرَّبَ إِلَيْهَا مِنْ قَوْلٍ أَوْ عَمَلٍ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ النَّارِ وَمَا قَرَّبَ إِلَيْهَا مِنْ قَوْلٍ أَوْ عَمَلٍ وَأَسْأَلُكَ مِنْ الْخَيْرِ مَا سَأَلَكَ عَبْدُكَ وَرَسُولُكَ مُحَمَّدٌ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَسْتَعِيذُكَ مِمَّا اسْتَعَاذَكَ مِنْهُ عَبْدُكَ وَرَسُولُكَ مُحَمَّدٌ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَسْأَلُكَ مَا قَضَيْتَ لِي مِنْ أَمْرٍ أَنْ تَجْعَلَ عَاقِبَتَهُ رَشَدًا
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা মিনাল খাইরি কুল্লিহি, আজিলিহি ওয়া আজিলিহি মা আলিমতু মিনহু ওয়ামা লাম আলাম ওয়া আউযুবিকা মিনাশ শাররি কুল্লিহি আজিলিহি ওয়া আজিলিহি মা আলিমতু মিনহু ওয়ামা লাম আলাম ওয়া আসআলুকাল জান্নাতা ওয়ামা ক্বাররাবা ইলাইহা মিন কাউলিন আউ আমালিন ওয়া আউজুবিকা মিনান্নার ওয়ামা ক্বাররবা ইলাইহা মিন কাউলিন আউ আমালিন
ওয়া আসআলুকা মিনাল খাইরি মা সাআলাকা আবদুকা ওয়া রাসূলুকা মুহাম্মাদুন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়া আসতায়িদুকা মিম্মাস তায়াদুকা মিনহু- আবদুকা ওয়া রাসূলুকা মুহাম্মাদুন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়া আসআলুকা মা কাজাইতা লী- মিন আমরিন আন তাজয়ালা -কিবাতাহু রাশাদা -মুসনাদে আহমাদ: ২৫১৩৭
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে সব ধরনের কল্যাণ প্রার্থনা করছি বর্তমানের কল্যাণ চাই ভবিষ্যতের কল্যাণ চাই যে কল্যাণ সম্পর্কে আমি জানি তা চাই এবং যে কল্যাণ সম্পর্কে আমি জানি না সেটাও চাই আপনার কাছে সব ধরনের অকল্যাণ থেকে আশ্রয় চাই বর্তমানের অকল্যাণ থেকে ভবিষ্যতের অকল্যাণ থেকে যে অকল্যাণ সম্পর্কে আমি জানি তা থেকে এবং যে অকল্যাণ সম্পর্কে আমি জানি না তা থেকে
আপনার কাছে জান্নাত প্রার্থনা করছি এবং এমন কথা কাজের তওফিক প্রার্থনা করছি- যা আমাকে জান্নাতের নিকটবর্তী করে দিবে আর আপনার কাছে জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি এবং এমন কথা কাজ থেকে বিরত থাকার তওফিক প্রার্থনা করছি- যা আমাকে জাহান্নামের নিকটবর্তী করে দিবে
আপনার ওই সব কল্যাণ প্রার্থনা করছি যা আপনার কাছে প্রার্থনা করেছে আপনার বান্দা রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি ওইসব অকল্যাণ থেকে; যা থেকে আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেছে আপনার বান্দা রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমি আপনার কাছে আরো প্রার্থনা করছি, আমার জন্য আপনি যেসব বিষয়ের ফায়সালা করেছেন তার পরিণাম শুভ করে দিন
যে দোয়া পাঠে মানুষের অভাব দূর হয়
বিখ্যাত তাবেয়ি হজরত মাকহুল (রহ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বাক্যগুলো সাতবার বলবে আল্লাহতায়ালা তার সত্তরটি অভাব দূর করবেন (তন্মধ্যে) সবচেয়ে হাল্কা বিপদ হলো (মানুষের) অভাব দোয়াটি হলো-
لاَ حَوْلَ وَلا قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ ، وَلا مَلْجَأَ مِنَ اللهِ إِلاَّ إلَيْهِ
উচ্চারণ : লা হাউলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লাবিল্লাহ- লা মালজায়া মিনাল্লাহি ইল্লা ইলাইহি
অর্থ : আল্লাহর সাহায্য ছাড়া গুনাহ থেকে বিরত থাকা এবং নেক আমলে মশগুল হওয়া সম্ভব না আল্লাহতায়ালার কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়ার কোনো জায়গা নেই তার কাছেই আশ্রয় গ্রহণ করতে হবে
আমীন! ছুম্মাহ আমীন!! আমিন ইয়া রাব্বাল লামীন|


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন